ঢাকা মঙ্গলবার, ০৬ মে, ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

লক্ষ্মীপুরে পূর্ব শক্রতার জেরে বসতঘরে হামলা-ভাঙচুর, আহত ৪

ভোরের মালঞ্চ | স্টাফ রিপোর্টার মে ২, ২০২৫, ০৮:০৩ পিএম লক্ষ্মীপুরে পূর্ব শক্রতার জেরে বসতঘরে হামলা-ভাঙচুর, আহত ৪

লক্ষ্মীপুরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বসতঘরে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে নিশাদ, সোহাগ ও জুয়েলদের বিরুদ্ধে। বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাতে সদর উপজেলার পূর্ব টুমচর গ্রামের ওলি মিয়া সওদাগর বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটে। শুধু হামলা নয় ভুক্তভোগীদের চিকিৎসাও নিতে দেয়নি অভিযুক্তরা।  


ভুক্তভোগী মাকসুদুর রহমান উপজেলার টুমচর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডস্থ ওলি মিয়া সওদাগর বাড়ির ইসমাইল হোসেনের ছেলে। অভিযুক্ত নিশাদ একই বাড়ির মনু আমিনের ছেলে। সোহাগ হোসেন আবদুল মতিনের ছেলে। আর জুয়েল নিশাদের ফুফাতো ভাই।

 
জানা গেছে, মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে ২০০৮ সালে মাকসুদ ও মনু আমিনদের সঙ্গে বিরোধ হয়। ওই ঘটনার মামলায় একাধিকবার জেল খেটেছেন মনু আমিনরা। কিছুদিন পূর্বে মামলাটির বিচার কার্য সম্পন্ন করে আদালত। এতে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে রয়েছেন আবদুল মতিন ও মনু আমিন। এছাড়াও বৃদ্ধ হওয়ায় গণি মিয়ার ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। 


পূর্ব শত্রুতার এই ঘটনাটি কেন্দ্র করে বুধবার রাতে মাকসুদদের ওপর পুনরায় হামলা করা হয়। ভাঙচুর করা হয়েছে বসতঘর। পিটিয়ে আহত করা হয় মাকছুদুর রহমান তার ভাই শামছুদ্দিন ও স্ত্রী কুলছুম বেগমকে। মাকছুদ ও শামছুদ্দিন নোয়াখালী সদর হাসপাতালে এবং কুলছুম বেগম লক্ষ্মীুপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মনু আমিনের ছেলে নিশাদ, ভাতিজা সোহাগ ও ভাগিনা জুয়েলের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক যুবক হামলা করে। এদের বেশিরভাগ ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। 


ঘটনার সময় মনু আমিনদের একটি রান্নাঘরও ভাঙচুর করা হয়েছে। আহত হয় সোহাগ, জুয়েল হোসেন ও আবদুস শহিদ।


মাকসুদের ভাই আজিম উদ্দিন বলেন, পূর্বের ঘটনাটি সত্য প্রমাণিত হওয়ায় আদালত মনু আমিনদের শাস্তি দিয়েছে। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে জুয়েল, সোহাগ ও নিশাদের নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা করে। প্রথমে বড় ভাই মাকসুদকে পৌরসভার মিয়ার রাস্তার মাথায়। পরবর্তীতে বাড়িতে এসে হামলা করে। ভাঙচুর করা হয় বসতঘর। লুটপাট করে ঘরে থাকা নগদ টাকা ও বিভিন্ন আসবাবপত্র। হামলার ঘটনায় আমাদের ৪ জন আহত হয়। 


তিনি আরও বলেন, আমাদের ঘর ভাঙচুর ও লুট করার পর জুয়েলরা মনু আমিনদের রান্নাঘর ভাঙচুর করে। আমাদের উপর দায় চাপাতে  কাজটি করেছে তারা। আমরা তাদের ঘর ভাঙচুর করেনি। হামলার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 


মাকসুদের ছেলে এস.এম আজিজুর রহমান বলেন, জুয়েলদের উদ্দেশ্য ছিল আমাদের হত্যা করা। কিন্তু স্থানীয়রা এগিয়ে এলে সেটি করতে ব্যর্থ হয়ে আমাদের ঘর ভাঙচুর করে। হামলায় যারা ছিল তাদের বেশিরভাগ ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। 


সে আরও বলেন, হামলার পর আব্বুসহ আমাদের আহত অন্যান্যদের সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেওয়া হয়নি। সেখানে ওদের লোকজন আমাদের ওপর হামলা করে। পরে অন্যত্র নিয়ে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। এখনো তারা বিভিন্নভাবে আমাদের মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা ভয়ে রয়েছি।


মাকসুদের চাচাতো ভাই শাকিল হোসেন বলেন, চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গেলে আমার উপর অতর্কিত হামলা করা হয়। পরে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যায়। সেখানেও জুয়েলদের ভাড়া করা লোকদের মারধরের শিকার  হয়। ছিনিয়ে নেয় আমার মোবাইলটি।


অভিযুক্ত সোহাগ বলেন, ঘটনার সময় মাকসুদদের সঙ্গে আমাদের মারামারি হয়। এতে আমিসহ আমাদের ৩ জন আহত হয়। মাকসুদরা আমার চাচার ঘর ভাঙচুর করেছে। তাদের ঘর আমরা ভাঙচুর করেনি। আর হামলার সময় যারা উপস্থিত ছিল, তারা কেউ বহিরাগত নয়। সবাই আমার আত্মীয়। ইতোমধ্যে হামলার ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। 


এবিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মোন্নাফ বলেন, জুয়েলদের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে মাকসুদরাও যদি অভিযোগ দেয় সেটিও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
 

Side banner