ঢাকা শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে এমপি ও এমপি পরিবার

ভোরের মালঞ্চ | অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মিঠু আগস্ট ১০, ২০২৩, ০৩:২২ পিএম ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে এমপি ও এমপি পরিবার

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-মহাত্মা গান্ধীর উদ্দেশ্য বলেছিলেন, ইংরেজ চলিয়া যাইবে ভালো কথা, কিন্তু ঢুকিলো ক্যামনে? এই আইন করার ফলে সর্বোচ্চ শাস্তি পেয়েছে ত্যাগী আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ কর্মীরা। কারণ এমপিদের  নির্দেশ ছাড়া পুলিশ মামলা নেয় নাই। আর এমপিদের শত্রু হচ্ছে প্রধানত দলীয় কর্মীরা।

 

কুমিল্লার বহু উপজেলার বেশ কিছু মামলায় আমি আসামি পক্ষে ছিলাম, এরা কেউ মুক্তিযোদ্ধা, কেউ সাবেক ছাত্রলীগ, কেউ দুর্দিনে নেতার অর্থ যোগানদাতা ছিলেন।

 

মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানু ৭/৮ মাস জেলে ছিলেন। সাবেক ছাত্রনেতা খন্দকার শরীফের মামলা ছয় মাস জজ কোর্ট জামিন নামঞ্জুরও করেননি মঞ্জুরও করেননি। পরে মামলাটি আমার হাতে এলে নামঞ্জুর করে হাইকোর্টে পাঠাই।

 

এ আইন করার পরামর্শ যারা দিয়ে ছিলেন, তারা অপরিণামদর্শী কিনা ভেবে দেখার সময় এসেছে।

 

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা মার্কার ব্যবহারও অনুরূপ একটি ভুল কাজ হয়েছিলো বলে আমি মনে করি। অন্তত ইউঃপি চেয়ারম্যান নির্বাচন ক্ষেত্রে এমপিদের প্রভাব বিস্তার খুবই অন্যায় কাজ হয়েছিলো।

 

বহু মানুষ প্রার্থী হওয়ারও সুযোগ পাননি। কুমিল্লার এক উপজেলায় কাউকে স্বতন্ত্রও দাঁড়াতে দেয়া হয়নি। সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত, মেম্বাররাও! এমপি সাহেবদের অনেকেই নিজেদের পরিবারের কথায় ক্ষুদ্র স্বার্থে দলের যে ক্ষতি করেছেন তা অপূরণীয়।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও দলের অনেক ক্ষতি করেছেন গত পনের বছর যাবৎ, যার প্রভাব আগামী নির্বাচনেও পড়তে পারে।

 

আওয়ামী লীগের জেলা-মহানগর কমিটি গঠন ক্ষেত্রে, কেন্দ্রীয় নেতাদের ভূমিকা রাখার সুযোগ না থেকে থাকলে, তাদের উচিত বড় গলায় কথা না বলা।

 

জেলা বা মহানগর কমিটির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের সিদ্ধান্তই যদি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে তারা কিসের কেন্দ্রীয়, বিভাগীয় দায়ীত্বশীল নেতা বলে দাবি করেন? 

 

কমিটি গঠন ক্ষেত্রে এবার দেখা গেছে, কেন্দ্র ঘোষিত বহিষ্কৃত ব্যক্তিরাও, বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার ছাড়াই কমিটিতে জায়গা পেয়ে গেছেন! কেন্দ্রীয় নেতারা এ সকল বহিষ্কার করে কেন নিজেদের হালকা প্রমাণ করেন? 

 

বিভিন্ন জেলা ও মহানগর কমিটি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে, এমপির পরিবারের কত জন অন্তর্ভুক্ত হতে যাচ্ছে, তার পরিসংখ্যান নেত্রীর কাছে তুলে ধরা উচিৎ ছিলো।

 

তবে সময় যে একেবারেই শেষ, এমনটি আমি মনে করি না। আওয়ামী লীগের সকল কর্মীদের আবেগের কেন্দ্রবিন্দু আমাদের নেত্রী, তবে ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে (বহুএলাকায়) স্থানীয় এমপি ও এমপি পরিবার। সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হলে, ভবিষতে সংগঠন সুসংগঠিত হবে আশা করা যায়। 

 

চিন্নিত সুবিধাবাদী ব্যক্তিদের দলের মালিক বানিয়ে দিলে, দক্ষ সংগঠকরা আত্মমর্যাদা নিয়ে চুপচাপ বসে থাকবে এটাই স্বাভাবিক।

 

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হয়ে যে নতুন আইন হবে, সে আইন যেনো নিরপরাধ কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে তা বিবেচনায় রেখে সাইবার নিরাপত্তা আইন হয় দাবি করছি।

 

মানুষ আঘাত পেলে সৃষ্টিকর্তাকেও গালি দেয়, এতে তার রাগ প্রশমিত হয়, সৃষ্টিকর্তা সেজন্য তাৎক্ষণিক সাজা দেন না, তা-ই তো তিনি মহান।

 

তবে মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন অরুচিকর এবং গুজব ছড়ানোর প্রতিকারও রাষ্ট্রে থাকতে হবে।

লেখক: সাবেক যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

Side banner