নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে স্মরণীয় সময় কাটাচ্ছে প্যারিসিয়ান সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)। প্রথমবার উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতে এরই মধ্যে শিরোপার ট্রেবল বাগিয়েছে লুইস এনরিকের দলটি। ফেভারিট হিসেবে উঠেছে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালেও। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ইংলিশ জায়ান্ট ও টুর্নামেন্টটিতে একবারের শিরোপাজয়ী চেলসি। চার বছর পর এবার তারা কোনো মেজর ট্রফি (কনফারেন্স লিগ) জিতেছে।
ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ টুর্নামেন্ট বলা হচ্ছে বিশ্বকাপকে। এবারই প্রথম নতুন ফরম্যাট ও বিশাল আয়োজনে ৩২টি দল নিয়ে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে মেগা টুর্নামেন্টটির প্রতিযোগী ছিল কেবল আট দল। পুরোনো ফরম্যাটে চেলসি দু’বার ফাইনাল খেলেছে। ২০১২ আসরে স্বপ্নভঙ্গ হলেও, ২০২১ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় ব্রাজিলিয়ান ক্লাব পালমেইরাসকে হারিয়ে। বিপরীতে পিএসজি এবারই প্রথম ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতে নামবে।
আজ (রোববার) বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১টায় ক্লাব বিশ্বকাপের মহারণে মুখোমুখি হবে পিএসজি ও চেলসি। নিউজার্সির দৃষ্টিনন্দন মেটলাইফ স্টেডিয়ামে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। চলমান এই বিশ্বকাপজুড়ে অতিরিক্ত গরম, খেলায় হঠাৎ বিঘ্ন ঘটানো যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিকূল আবহাওয়া, টিকিটের মাত্রাতিরিক্ত দাম ও সে কারণে দর্শকখরা নিয়ে বেশ সমালোচনা হয়েছে। তবে মাঠের খেলা একেবারেই হতাশ করেনি ফুটবলভক্তদের।
পিএসজি ও চেলসি শেষবার মুখোমুখি হয়েছিল ২০১৬ সালে। লন্ডনে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ ও আন্দ্রে র্যাবিও’র গোলে ফরাসিরা ২-১ গোলে জিতেছিল। চেলসির হয়ে একমাত্র গোলটি করেন দিয়েগো কস্তা। ওই ম্যাচটি ছিল উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট ম্যাচের সেকেন্ড লেগ। যেখানে অ্যাগ্রিগেটে ৪-২ গোলে জিতে পিএসজি পরের রাউন্ডে ওঠে। সবমিলিয়ে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের ক্লাব দুটি আটবার মোকাবিলা করেছে, যেখানে পিএসজি তিন ও চেলসির জয় দুটিতে। বাকি তিন ম্যাচ ড্রতে নিষ্পত্তি হয়। শেষ চারবারের দেখায় জয় পায়নি চেলসি, পিএসজির জয় দুটিতে ও ড্র হয় বাকি দুই ম্যাচ।
মৌসুমজুড়ে দুর্দান্ত সময় কাটানো পিএসজি ক্লাব বিশ্বকাপেও উড়ন্ত ফর্মে আছে। কেবল গ্রুপপর্বে বোটাফোগোর কাছে তারা (১-০) হোঁচট খেয়েছিল। এর বাইরে বাকি সব ম্যাচেই দাপট ছিল দেম্বেলে-রুইজ-হাকিমিদের। তারা ফাইনালে ওঠে অন্যতম ফেভারিট রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে। এর আগে এনরিকের দলটি লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামি ও বায়ার্ন মিউনিখের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে আরেকটি মেজর ট্রফি জয়ের পথ সুগম করেছে।
খেলোয়াড় ও দলের ফর্মই ফাইনালের আগে আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে পিএসজি কোচ এনরিকেকে, ‘দলের সাফল্যের মূল নায়ক খেলোয়াড়রা। আমি কোনো তারকা নই, যা করি সেটিকে ভালোবাসি। নিজের ক্যারিয়ার উপভোগ করি, বিশেষ করে কঠিন সময়ে। জয়ের সবচেয়ে ভালো দিক হলো আমাদের অনুসারীদের খুশি করতে পারা। প্রশংসিত হওয়ার চেয়ে সমালোচিত হলেই আমি আরও ভালোভাবে কাজ করতে পারি। আমরা বিশেষ মৌসুম কাটাচ্ছি, চেলসির চেয়ে ভালো দল হতে হলে আরও এক ধাপ বাকি। ক্লাবের জন্য আমরা ইতিহাস গড়তে চাই।’
অন্যদিকে, এই আসরের আগে সেভাবে ফেভারিট হিসেবে বিবেচিত না হলেও বেনফিকা, পালমেইরাস ও ফ্লুমিনেন্সকে হারিয়ে চেলসি নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছে। তবে নিশ্চিতভাবেই তাদের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা হতে যাচ্ছে পিএসজির বিপক্ষে। এ প্রসঙ্গে এনজো-পালমার-জেমস-পেদ্রোদের চেলসি কোচ এনজো মারেসকা জানান, ‘এটি দারুণ অর্জন। প্রিমিয়ার লিগে শীর্ষ চারে অবস্থান, কনফারেন্স লিগ জয়ের পর এখন আরেকটি প্রতিযোগিতার ফাইনালে। আমরা খুব খুশি। আশা করি মৌসুমের শেষ ম্যাচের মাধ্যমে আমরা এই টুর্নামেন্টও জিতব।’
আপনার মতামত লিখুন :