ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে এবার গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার সন্তান মো. আইমান মাহমুদ। প্রাথমিক প্রার্থী তালিকায় তার নাম ইতোমধ্যেই স্থান পেয়েছে ।
আইমান বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছেন।
জানা যায়, কৈশোর থেকেই গবেষণার প্রতি আলাদা আগ্রহী আইমান। মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে তিনি জানান— “আমার লক্ষ্য হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগ ও হলকে গবেষণার প্রাণকেন্দ্রে রূপান্তর করা। শিক্ষার্থীরা যেন শুধু পাঠ্যপুস্তকনির্ভর না থেকে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করতে পারে, সেজন্য প্রয়োজনীয় ফান্ডিং, রিসোর্স ও আন্তর্জাতিক সংযোগ নিশ্চিত করাই হবে আমার অঙ্গীকার।”
তার নির্বাচনী অঙ্গীকারের মধ্যে রয়েছে—
১.শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত গবেষণা ফান্ডিং নিশ্চিত করা
2. আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রবেশাধিকার উন্মুক্ত করা
৩. ইন্ডাস্ট্রি–একাডেমিয়া সহযোগিতার মাধ্যমে গবেষণা তহবিল সংগ্রহ
৪.আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ গবেষণা গ্রান্ট চালু করা
৫. বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আধুনিক রিসার্চ পোর্টাল তৈরি করা
৬.মানসম্মত গবেষণাকে স্বীকৃতি প্রদান
৭.বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে রিসার্চ এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের ব্যবস্থা
৮. বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রিসার্চ কনফারেন্সে সুযোগ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃক খরচ বহন করে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
৯.বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃতপ্রায় গবেষণা কেন্দ্রগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করা
১০.নিয়মিত গবেষণা সেমিনার ও ওয়ার্কশপ আয়োজন
১১.বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ফান্ড এর সুষ্ঠু বন্টন নিশ্চিত করা
আইমান লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরাসরি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ঢাকার নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করেন। কলেজে থাকাকালীন তিনি নটরডেম রোটারেক্ট ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট, নটরডেম কালচারাল ক্লাবের অ্যাসোসিয়েট সেক্রেটারি এবং নটরডেম আবৃত্তি দলের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সে সময়ই তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সেমিনার, কেস সলভিং প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়ে কৃতিত্বের সাথে পুরস্কৃত হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর আইমান বিভিন্ন সংগঠনের সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। তিনি বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদের সদস্য, রোটারেক্ট ক্লাব অব গুলশান টাইগার্সের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট (২০২৩-২৪), এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টুরিস্ট সোসাইটির সক্রিয় সদস্য। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ ইয়ুথ মেন্টাল হেলথ অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ছিলেন। সামাজিক কর্মকাণ্ডে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০২১ সালে তিনি গ্লোবাল পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাওয়ার্ড-এর জন্য মনোনীত হন।
শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি আইমান বর্তমানে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান বেবিউটব-এর চিফ অপারেটিং অফিসার (COO) হিসেবে কাজ করছেন, যার লক্ষ্য শিশুদের জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করা। এছাড়া তিনি জাপানি ব্যবসায়ীদের সাথে বিভিন্ন প্রজেক্টে বিজনেস অ্যানালিস্ট হিসেবে কাজ করছেন এবং "মাই জাপান" নামক প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশি তরুণদের জাপানে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে কাজ করছেন।
আইমানের স্বপ্ন— ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। তার ভাষায়,
“আমি চাই প্রতিটি হল হোক গবেষণাগার, প্রতিটি বিভাগ হোক জ্ঞানচর্চার নতুন দিগন্ত। এভাবেই আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের বুকে একটি মর্যাদাপূর্ণ গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারবো।
আপনার মতামত লিখুন :