ঢাকা রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধের মধ্যেই পশ্চিম তীরে আবাসন প্রকল্প ইসরায়েলের, নিন্দা সৌদির

ভোরের মালঞ্চ | অনলাইন ডেস্ক মার্চ ৭, ২০২৪, ০৬:৩৮ পিএম যুদ্ধের মধ্যেই পশ্চিম তীরে আবাসন প্রকল্প ইসরায়েলের, নিন্দা সৌদির

হামাসের সঙ্গে চলমান যুদ্ধের মধ্যেই ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে নতুন আবাসন প্রকল্প নির্মাণের পদক্ষেপ নিচ্ছে ইসরায়েল। বুধবার পশ্চিম তীরের মালে অদুমিম,কেদার ও এফরাতে ৩ হাজার ৫০০ নতুন আবাসন নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। 

 

জেরুজালেমের নিকটবর্তী এই তিন এলাকা বেশ আগে দখল করেছিল ইসরায়েল। বুধবার বিশ্বের এই একমাত্র ইহুদি রাষ্ট্রটির অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোতরিচ সেখানকার সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলকে জানিয়েছেন, এই তিন এলাকায় মোট ১৮ হাজার ৫১৫টি আবাসন বা অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই ৩ হাজার ৫০০ ভবন নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

 

পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে স্মোতরিচ বলেন, ‘শত্রুরা আমাদের ক্ষতি করতে চাইছে। তারা ভাবছে আমরা দুর্বল হয়ে পড়েছি। কিন্তু আমরা দুর্বল হইনি এবং এই তিন এলাকায় আমরা আবাসন নির্মাণ করবই।’

 

যে তিন এলাকায় আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলা হচ্ছে, ১৯৬৭ সালের সীমানা নির্ধারণ রেকর্ড অনুযায়ী এই এলাকগুলো পশ্চিম তীরের ভূখণ্ড। আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর ১৯৬৭ সালে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।

 

তবে তারপর থেকে বিগত কয়েক দশকে নিয়মিত সেই সীমানা লঙ্ঘণের অভিযোগ উঠেছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে।

 

বেজালেল স্মোতরিচের এক্সবার্তার পর ইসরায়েলের এ পদক্ষেপের কঠোর নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিৃবতিতে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘পশ্চিম তীরের মালে অদুমিম,কেদার ও এফরাতে আবাসন প্রতিষ্ঠার যে অনুমোদন ইসরায়েলের সরকার দিয়েছে, তা আন্তর্জাতিক আইন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন এবং জাতিসংঘের সনদের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। এ ধরনের পদক্ষেপ এই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতারও বিরোধী।’

 

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সামরিক-বেসামরিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিকসহ ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় আরও ২৪০ জন ইসরায়েলি এবং অন্যান্য দেশের নাগরিককে।

 

১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে সেদিন প্রথম একদিনে এতজন মানুষের হত্যা দেখেছে ইসরায়েল। অভূতপূর্ব সেই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী এবং তার এক সপ্তাহ পর বিমান বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

 

অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩০ হাজার ৫৩৪ জন, আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৭২ হাজার। নিহত ও আহতদের মধ্যে একটি বড় অংশই নারী, শিশু, কিশোর-কিশোরী এবং বেসামরিক লোকজন।

 

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যাপক প্রচেষ্টায় গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মানবিক বিরতি ঘোষিত হয়েছিল গাজায়। সে সময় ১০৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তার পরিবর্তে বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ১৫০ জন ফিলিস্তিনিকে ছেড়ে দিয়েছে ইসরায়েলও।

 

হিসেব অনুযায়ী, এখনও ১৩২ জন জিম্মি রয়েছেন হামাসের কব্জায়। তাদের ছাড়িয়ে আনতে গাজায় রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই দ্বিতীয় দফায় ৪০ দিনের যুদ্ধবিরতি হওয়ার কথা রয়েছে।

সূত্র : আল আরাবিয়া

Side banner