লক্ষ্মীপুর ভবানীগঞ্জ চৌরাস্তা বাজারে একসময় প্রতিদিন ঝাড়ু দিতেন নূর জাহান বেগম। কঠোর পরিশ্রমেই চলতো তার সংসার। কিন্তু নিজের কোনো বসতভিটে ছিল না তার। তাই বাজারের ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা আর ধারকর্জ করে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি নূর নবীকে ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেন—এক টুকরো জমি কেনার আশায়।
নূর নবী তাকে জমি বুঝিয়ে দিলেও রেজিস্ট্রি করে দিলেন না। কিছুদিন সেই জমিতে বসবাস করার পর একদিন হঠাৎ জানতে পারেন—নূর নবী সেই জমি অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছেন। মাথার উপর ছাদের স্বপ্ন ভেঙে যায় নূর জাহানের। আবারও তাকে অন্যের জায়গায় আশ্রয় নিতে হয়।
ঋণে জর্জরিত নূর জাহান জমি না পেয়ে বারবার টাকা ফেরত চাইতে গিয়েছেন নূর নবীর কাছে। কিন্তু কোনো উত্তর মেলেনি। দুশ্চিন্তা গ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি।
এরই মধ্যে আরেক দুর্ভাগ্য নেমে আসে তার জীবনে—প্রায় এক বছর আগে এক দুর্ঘটনায় পা ভেঙে যায় নূর জাহানের। সেই থেকে তিনি অক্ষম হয়ে পড়েন। জীবনের চাকা থেমে যায়। এখন বাজারে ভিক্ষা করেই চলে তার সংসার।
এর আগে তিনি ন্যায়বিচার চেয়ে ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু বিবাদী নূর নবী হাজির হননি। তাই ২০২২ সালের ১৩ আগস্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল হাসান রনি তাকে উচ্চ আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেন এবং একটি আদেশ কপি দেন। কিন্তু আর্থিক টানাপোড়েন আর শারীরিক অক্ষমতার কারণে আদালতে যাওয়া সম্ভব হয়নি তার।
শেষ আশায় তিনি লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায়ও অভিযোগ করেন। কিন্তু সেখান থেকেও কোনো সাড়া পাননি।
এ বিষয়ে নুর নবী টাকা পাওনার বিষয়টি অস্বীকার করলেও তার মাধ্যমে জমি কেনা এবং লেনদেন হয়েছে বলে জানান। নূরনবী ভবানীগঞ্জ এলাকার হুসেন ডিলারের বাড়ির বাসিন্দা।
এভাবেই জমি হারিয়ে, টাকা হারিয়ে এবং ন্যায়ের আশায় ঘুরে ঘুরে আজও মানবেতর জীবনযাপন করছেন নূর জাহান বেগম।
আপনার মতামত লিখুন :