ভারি খাবারের পর অনেকেই স্বস্তির জন্য কোলা জাতীয় কার্বনেটেড পানীয় পান করেন। কিন্তু আপনি কি জানেন, এই অভ্যাস দীর্ঘমেয়াদে শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর? চলুন, জেনে নিই।
অতিরিক্ত চিনি ও স্বাস্থ্যঝুঁকি
কার্বনেটেড ড্রিংকস, বিশেষ করে যেগুলোতে চিনি বেশি, তা ওজন বৃদ্ধি, টাইপ-২ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও দাঁতের ক্ষয়ের মতো নানা সমস্যার কারণ হতে পারে। চিনি ও অ্যাসিড মিলে দাঁতের এনামেল ক্ষয় করে দেয়, ফলে গর্ত ও দাঁতের ক্ষয় দেখা দেয়।
হাড় দুর্বল? ফসফরিক অ্যাসিডের কারণে
অনেক কোলাতে থাকা ফসফরিক অ্যাসিড শরীরের ক্যালসিয়াম শোষণে বাধা সৃষ্টি করে, যা হাড় দুর্বল করার ঝুঁকি বাড়ায়।
কিডনিতে পাথর?
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন এক বা একাধিক গ্লাস চিনি-মিশ্রিত কোলা পান করেন, তাদের কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ২৩% বেশি। অন্যদিকে, নন-কোলা মিষ্টিযুক্ত পানীয়ের ঝুঁকি ৩৩% পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। ব্রাজিলের একজন ইউরোলজিস্ট, ডা. থ্যালেস আন্দ্রেড, এক রোগীর কেস শেয়ার করেন।
যিনি প্রতিদিন ২-৩ লিটার কোলা পান করতেন এবং তার মূত্রাশয় থেকে ৩৫টি কিডনির পাথর অপসারণ করতে হয়েছিল।
কারণ
ফসফরিক অ্যাসিড প্রস্রাবকে অ্যাসিডিক করে তোলে, যা পাথর গঠনে সহায়তা করে। ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপ ক্যালসিয়াম, অক্সালেট এবং ইউরিক অ্যাসিডের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। এগুলো কিডনির পাথরের মূল উপাদান।
স্পার্কলিং ওয়াটারে (যেমন মিনারেল ওয়াটার) এই ধরনের ঝুঁকি নেই, তবে অতিরিক্ত সোডিয়াম এড়িয়ে চলা ভালো।
কিডনি-বান্ধব পানীয়ের বিকল্প
১। পানি
সবচেয়ে ভালো বিকল্প। প্রতিদিন ২–৩ লিটার পানি পান করুন যাতে প্রস্রাব ফ্যাকাশে রঙের থাকে। এটি স্ফটিক জমা হতে দেয় না।
২। লেবুর রস
লেবু বা কমলার রসে থাকা সাইট্রেট ক্যালসিয়াম অক্সালেট পাথর প্রতিরোধ করে। প্রতিদিন ১/২ কাপ লেবুর রস পানিতে মিশিয়ে পান করুন।
৩। কফি ও চা
ক্যাফেইনযুক্ত বা ক্যাফেইনমুক্ত কফি, গ্রিন টি—সবই কিডনি পাথরের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। গ্রিন টিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাথর গঠন রোধে সহায়ক।
অন্যান্য বিকল্প: ডাবের পানি, ডালিমের রস, ভেষজ চা। এসব পানীয় প্রাকৃতিকভাবে মূত্রবর্ধক এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, যা কিডনিকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া
আপনার মতামত লিখুন :